অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হল এমন ধরনের একটি অনলাইন ভিত্তিক কাজ যেখানে প্রডাক্ট অন্যজনের কিন্তু প্রোডাক্ট সেল করার জন্য আপনাকে একটা কমিশন দেওয়া হবে। আপনার যদি পার্সোনাল ওয়েবসাইট, ব্লগ, ইউটিউব চ্যানেল, ইনস্টাগ্রাম একাউন্ট অথবা পিন্টারেস্ট একাউন্ট থাকে তাহলে আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেন। তবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য পার্সোনাল ওয়েবসাইট থাকাটাই সবচে ভাল। যারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে চান তারা অবশ্যই সম্পূর্ণ পড়ুন কারন এর মধ্যে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি
সাধারণভাবে বলতে গেলে বলতে হবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হল এক ধরনের মার্কেটিং প্রক্রিয়া এই প্রক্রিয়া ব্যবহার করে বর্তমান সময়ে ই-কমার্স ওয়েবসাইট গুলো তাদের পর্নের মার্কেটিং করছে। ধরুন আপনার একটি কমার্স ওয়েবসাইট রয়েছে এর মধ্যে অনেক কোম্পানি তাদের পণ্য রেখেছে এখন তাদের পন্য মানুষের কাছে বিজ্ঞাপন অথবা মার্কেটিং এর মাধ্যমে পৌঁছানো হচ্ছে কমার্স ওয়েবসাইট এর কাজ এর জন্য আপনি টিভিতে অথবা অনলাইনে ইনকাম বিজ্ঞাপন এর মাধ্যমে মার্কেটিং করতে পারেন। আপনার কাছে যেই কোম্পানিগুলো রয়েছে তাদের পণ্য যদি আপনি টিভিতে অথবা অনলাইনে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে মার্কেটিং করতে চান তাহলে আপনার যে পরিমাণ খরচ করবেন এই পরিমাণ প্রোডাক্ট বিক্রি করতে পারবেন কিনা এই ঝুঁকি থেকে যায়। এতকিছু করার পর আপনার পণ্য বিক্রি হল কিনা এরজন্য বিজ্ঞাপনদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো দায়ী থাকবে না কিন্তু আপনি যদি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনার পণ্য গুলো অন্য মানুষের ওয়েবসাইটে দেখানোর ব্যবস্থা করে দেন এবং পণ্য বিক্রি হলে এর থেকে একটা পার্সেন্টিস ওয়েবসাইটের মালিক কে দিয়ে দেন তাহলে ঝুঁকি ছাড়া আপনার কমার্স ওয়েবসাইটের লাভ হয়ে গেল। ঠিক একি ভাবে এই কাজটি করে থাকে ই-কমার্স স্টোর ওয়েবসাইট গুলো আর যারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে তারা ই-কমার্স ওয়েবসাইট এর পণ্য গুলো তাদের ওয়েবসাইটে রাখে এবং বিক্রি করে তারা একটা কমিশন পায়।কিভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে করবেন
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য পার্সোনাল ব্লগ ও ওয়েবসাইট থাকা সবচেয়ে ভালো তাছাড়া ইউটিউব চ্যানেল অথবা সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয় পেজ বা একাউন্ট থাকলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেন। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েবসাইট হচ্ছে অ্যামাজনে ই-কমার্স স্টোর তবে যারা বাংলাদেশ ভিত্তিক ওয়েবসাইট পরিচালনা করেন তারা বিডি শপ এর অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম ব্যবহার করতে পারেন। তাছাড়া চাইলে দারাজ এবং বাগডুম এর সাথে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর কাজ করতে পারেন। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য প্রথমে আপনাকে ভাল মানের একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট নির্বাচন করতে হবে। আপনার ওয়েবসাইট অথবা অডিয়েন্স এর উপর ভিত্তি করে আপনি আপনার অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম নিয়ে কোন জায়গায় কাজ করবেন প্রথমে নির্বাচন করুন। যাদের অডিয়েন্স ইউরোপ কান্ট্রির তারা অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম ব্যবহার করতে পারেন। তবে অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলো এলাকা ভিত্তিক সেবা দিয়ে থাকে চাইলে তাদের সঙ্গে কাজ করতে পারেন। তাছাড়া ক্লিকব্যাংক ওয়েবসাইটের সঙ্গে কাজ করতে পারেন। বিভিন্ন ই-কমার্স ওয়েবসাইট তাদের পণ্য ক্লিক ব্যাংকের মধ্যে রেখেছে এই পন্য যদি আপনি বিক্রি করতে পারেন তাহলে এর থেকে আপনাকে একটা কমিশন দেওয়া হবে যা আপনার ক্লিকব্যাংক একাউন্ট এর মধ্যে যুক্ত হবে এবং পরে তা তুলতে পারবেন।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করার জন্য ৫টি ধাপ অনুসরণ করুন। সঠিক নিয়মে কঠিন কাজ করলেও সহজ লাগে কিন্তু ভুল নিয়মে সহজ কাজ করতে কঠিন লাগে তাই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার সঠিক নিয়ম অনুযায়ী কাজ করুন।
১. কোন ধরনের পণ্য নিয়ে কাজ করবেন এই বিষয়টি নিশ্চিত করে নিন তা না হলে সমস্যা সৃষ্টি হবে। বর্তমান সময়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর প্রচুর চাহিদা তাই অনেক এই কাজে এসে এর ডিমান্ড বাড়িয়ে দিয়েছে তাই কোনো নিস প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করা সবচেয়ে ভাল উপায়। শুধু প্রোডাক্ট নির্বাচন করলে চলবে না এর দাম এবং চাহিদার কথা মাথায় রাখতে হবে। এমন প্রোডাক্ট নির্বাচন করুন যার প্রচুর চাহিদা রয়েছে এবং এর দাম যেন কম না হয় কমপক্ষে ১০০/২০০ ডলার হয় তাহলে ১০/১৫% কমিশন পেলেও আপনার ভালো পরিমাণ টাকা থেকে যাবে।
২. প্রডাক্ট নির্বাচন করা হয়ে গেলে ওয়েবসাইটের জন্য কাজ করা শুরু করুন। আপনার প্রোডাক্ট এর নাম অনুযায়ী একটি ডোমেইন নিয়ে ওয়েবসাইট এর মধ্যে যুক্ত করুন। ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করতে পারেন। ওয়ার্ডপ্রেস এর জন্য ভালো মানের হোস্টিং এর প্রয়োজন হবে। ওয়েবসাইট কন্ট্রোল করা ভালো ভাবে শিখে নিন তা না হলে পরে সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। তবে চাইলে ব্লগার এর মধ্যে ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন তবে এর মধ্যে ওয়েবসাইট ভালোভাবে কাস্টমাইজ করা যায় না তাই ওয়ার্ডপ্রেস এর মধ্যে ওয়েবসাইট তৈরি করাই ভালো।
৩. ওয়েবসাইট তৈরী করা হয়ে গেলে যে ওয়েবসাইটে সঙ্গে আপনি কাজ করতে চান সেই ওয়েবসাইটের মধ্যে অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম এর মধ্যে একটি অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করে ফেলুন। তারপর আপনি আপনার সিলেক্ট করা প্রোডাক্টগুলো আপনার ওয়েবসাইটের মধ্যে যুক্ত করতে থাকুন।
৪. এখন আসবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ এটি হল এসইও অথবা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। এই কাজ করার উদ্দেশ্য হল সার্চ ইঞ্জিন যেমন গুগল, ইয়াহু, বিং এগুলো যেন আপনার ওয়েবসাইটের পোষ্ট গুলোকে উপরে দেখিয়ে থাকে। তবে যদি আপনি পেইড মার্কেটিং করেন তাহলে এসইও করার দরকার নাই।
৫. যারা যারা ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে চান তারা ভিডিওর নিচে অ্যাফিলিয়েট লিংক দিতে পারেন তবে প্রোডাক্টের এফিলিয়েট লিংক খুব বেশি বড় হয় বিধায় বিটলি দিয়ে লিংক ছোট করে দিতে পারেন।
বাংলাদেশ থেকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সম্ভাবনা
ইউরোপ কান্ট্রির ইউটিউবার এবং ব্লগাররা তাদের ৭৭ পার্সেন্ট এফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আয় করে থাকে কিন্তু এই তুলনায় আমরা অনেক পিছিয়ে রয়েছি এর থেকে বের হতে হবে এবং বিশ্ববাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মধ্যে আমাদেরকে আসতে হবে। বর্তমানে আমাদের পাশের দেশ ভারত এর ইউটিউবার এবং ব্লগাররা অ্যাফিলিয়েট ইনকাম এর দিকে নজর দিয়েছে। তাদের কিছু জনপ্রিয় ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলো সম্পূর্ণ অ্যাফিলিয়েট নির্ভর। অ্যাফিলিয়েট এর এত বড় বাজার ধরতে হবে সকলের এই বিষয়টির সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে হবে এবং এই অনুযায়ী কাজ করতে হবে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কোর্স নিয়ে কিছু কথা
বর্তমান সময়ে জনপ্রিয় একটি অনলাইন ইনকাম মাধ্যম অনলাইন কোর্স। অনেক কোর্স রয়েছে যেগুলো সত্যি কাজের তবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং নিয়ে বাংলাদেশের জনপ্রিয় কিছু কোর্স রয়েছে যার মধ্যে তারা শিখিয়ে থাকে কিভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে হয়, কিভাবে ওয়েবসাইট খুতে হয়, কিভাবে এসইও করতে হয়, কিভাবে ফেইসবুক মার্কেটিং করতে হয়, কিভাবে গুগল বিজ্ঞাপন চালু করতে হয় এই সকল (হাজিবাজি) বিষয়। আপনি ইউটিউব এর মধ্যে গিয়ে সার্চ করুন এই টপিক গুলোর উপরে চমৎকার তথ্য বহুল অনেক ভিডিও পাবেনা যা সম্পূর্ণ ফ্রী তাই আমার মনে হয় টাকা দিয়ে এই সকল ফ্রী কথা জানার যুক্তি নাই তবে যাদের কোর্স করার অনেক ইচ্ছা তারা করতে পারেন।